সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পরিবারের জন্য সাহায্য | বিবাহ

যেভাবে তর্কবিতর্ক থামানো যেতে পারে

যেভাবে তর্কবিতর্ক থামানো যেতে পারে

প্রতিদ্বন্দ্বিতা

আপনি ও আপনার সাথি কি কোনো বিষয় ঠান্ডা মাথায় আলোচনা করতে পারেন না? আপনারা কি এমন একটা জায়গা দিয়ে হাঁটছেন বলে মনে হয়, যেখানে মাইন পাতা আছে আর যেকোনো সময় বিস্ফোরণ হতে পারে?

যদি তাই হয়ে থাকে, তবে নিশ্চিত হন এই বিষয়ে আপনি উন্নতি করতে পারেন। কিন্তু, প্রথমে আপনি ও আপনার সাথি কেন এত বেশি তর্কবিতর্ক করেন, তার কারণ খুঁজে বার করার চেষ্টা করুন।

যে-কারণে এমনটা ঘটে

ভুল বোঝাবুঝি।

জিলিয়ান a নামে একজন স্ত্রী স্বীকার করেন: “কখনো কখনো আমি আমার স্বামীকে এমন কিছু বলে ফেলি, যা আসলে আমি তাকে বলতে চাইনি। আবার কখনো কখনো আমি হয়তো ভেবেছি যে, আমি তাকে কোনো একটা বিষয় বলেছি, যখন কিনা আমি তাকে তা বলিনি। আমার জীবনে সত্যি এমনটা ঘটেছে!”

মতপার্থক্য।

আপনাকে ও আপনার সাথিকে যত উপযুক্ত বলেই মনে হোক না কেন, কিছু কিছু বিষয়ে আপনাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে। কেন? কারণ দু-জন ব্যক্তি কখনো একরকম হতে পারে না আর এই বিষয়টা বিয়েতে হয় বৈচিত্র্য আনে, নয়তো সমস্যা সৃষ্টি করে। বেশিরভাগ দম্পতিদের ক্ষেত্রেই এর ফল হয় সমস্যা।

ভালো আদর্শের অভাব।

রেচেল নামে একজন স্ত্রী বলেন: “আমার বাবা-মা প্রায়ই তর্কবিতর্ক করত ও একে অপরের সাথে খারাপ ভাষায় কথা বলত, তাই আমার যখন বিয়ে হয়, তখন আমিও আমার স্বামীর সাথে ঠিক একইভাবে কথা বলতাম, যেভাবে আমার মা আমার বাবার সাথে কথা বলত। কীভাবে সম্মান দেখাতে হয় আমি তা শিখিনি।”

উদ্‌বিগ্ন হওয়ার প্রকৃত কারণ।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, কোনো একটা বিষয় নিয়ে তুমুল ঝগড়া বাধলেও, ঝগড়ার আসল কারণ ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, “তুমি সবসময় দেরি কর” এই বলে যে-ঝগড়া শুরু হয়, তার কারণ আসলে দেরি করা নয় বরং তার সাথির এইরকম মনে করা যে, তাকে অবহেলা করা হয়েছে।

কারণ যা-ই হোক না কেন, প্রায়ই তর্কবিতর্ক করা স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে আর এমনকী তা বিবাহবিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তাহলে, কীভাবে আপনি তর্কবিতর্ক করা বন্ধ করতে পারেন?

আপনি যা করতে পারেন

তর্কবিতর্ক এড়ানোর একটা উপায় হল, সেই কারণগুলো অনুসন্ধান করা, যেগুলো তর্কবিতর্ককে উসকে দেয়। যখন পরিস্থিতি শান্ত হয়, তখন আপনি ও আপনার সাথি নীচে দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

১. সম্প্রতি যে-বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে, প্রত্যেকে তা আলাদা আলাদা কাগজে লিখুন। উদাহরণস্বরূপ, একজন স্বামী হয়তো এইরকম লিখতে পারেন, “তুমি সারাদিন তোমার বন্ধুবান্ধবদের সাথে কাটিয়েছ আর একবারও আমাকে ফোন করে জানাওনি যে, তুমি কোথায় ছিলে।” আবার একজন স্ত্রী হয়তো এইরকম লিখতে পারেন, “তোমার খারাপ লেগেছে কারণ আমি আমার বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটিয়েছি।”

২. খোলাখুলিভাবে আলোচনা করুন: বিষয়টা কি সত্যি এতটাই গুরুতর ছিল? এটা কি উপেক্ষা করা যেতে পারত? কিছু কিছু ক্ষেত্রে, শান্তি বজায় রাখার জন্য হয়তো ভিন্ন মতামত মেনে নেওয়া এবং প্রেমের সাথে বিষয়টা ঢেকে দেওয়া যেতে পারে।—বাইবেলের নীতি: হিতোপদেশ ১৭:৯.

আপনি ও আপনার সাথি যদি এই উপসংহারে আসেন যে, বিষয়টা এতটা গুরুতর ছিল না, তবে একে অপরের কাছে ভুল স্বীকার করুন ও বিষয়টা ভুলে যান।—বাইবেলের নীতি: কলসীয় ৩:১৩, ১৪.

বিষয়টা যদি আপনাদের একজনের কিংবা উভয়ের কাছে গুরুতর বলে মনে হয়, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ নিন।

৩. তর্কবিতর্কের সময়ে আপনি কেমন অনুভব করেছিলেন, তা লিখে রাখুন আর আপনার সাথিকেও তা করতে বলুন। উদাহরণস্বরূপ, একজন স্বামী হয়তো এইরকমটা লিখতে পারেন, “আমার মনে হয়, আমার চেয়ে তোমার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে থাকতে তোমার বেশি ভালো লাগে।” একজন স্ত্রী হয়তো লিখতে পারেন, “আমার মনে হয়, তুমি আমাকে একটা ছোটো বাচ্চা বলে মনে করো, যাকে সবসময় বাবার কাছে গিয়ে কৈফিয়ত দিতে হবে।”

৪. একে অপরের সাথে কাগজ বদলাবদলি করে তা পড়ুন। তর্কবিতর্কের সময় আপনার সাথির উদ্‌বিগ্ন হওয়ার প্রকৃত কারণ কী ছিল? সেইসময় তর্কবিতর্ক না করে আপনারা ব্যক্তিগতভাবে কী করে মূল সমস্যা সমাধান করতে পারতেন, তা আলোচনা করুন।—বাইবেলের নীতি: হিতোপদেশ ২৯:১১.

৫. এই পরামর্শ কাজে লাগিয়ে যা শিখেছেন, তা আলোচনা করুন। আপনি যে-উপায় সমস্যা সমাধান করতে শিখলেন, তা ভবিষ্যতে কীভাবে কাজে লাগাতে পারেন? ◼ (g১৩-E ০২)

a কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।