সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠ ৯

কীভাবে আপনার পরিবার সুখী হতে পারে?

কীভাবে আপনার পরিবার সুখী হতে পারে?

১. পারিবারিক সুখের জন্য কেন বৈবাহিক ব্যবস্থা অতীব গুরুত্বপূর্ণ?

সুসমাচার পরম ধন্য বা সুখী ঈশ্বর যিহোবার কাছ থেকে আসে, যিনি চান যেন পরিবারগুলো সুখী হয়। (১ তীমথিয় ১:১১) তিনিই বিয়ের উদ্যোক্তা। সুখী পরিবারের জন্য বৈধ বিয়ে অতীব গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর ফলে এমন এক নিরাপদ পরিবেশ পাওয়া যায়, যেখানে সন্তানদের মানুষ করে তোলা সম্ভব।

বিয়েকে ঈশ্বর কোন দৃষ্টিতে দেখে থাকেন? তিনি চান যেন একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে এক স্থায়ী ঐক্য গড়ে ওঠে। খ্রিস্টানদের বিয়ের রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত স্থানীয় আইনগুলোর প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। (লূক ২:১, ৪, ৫) যিহোবা চান যেন স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের প্রতি অনুগত থাকে। (ইব্রীয় ১৩:৪) তিনি বিবাহবিচ্ছেদ ঘৃণা করেন। (মালাখি ২:১৬) কিন্তু, সেই সময় তিনি খ্রিস্টানদেরকে বিবাহবিচ্ছেদ এবং পুনরায় বিয়ে করার অনুমতি দেন, যখন তাদের সাথিরা ব্যভিচার করে।—পড়ুন, মথি ১৯:৩-৬, .

২. একজন স্বামী ও স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি কেমন আচরণ দেখানো উচিত?

যিহোবা নারী ও পুরুষকে বিয়েতে পরিপূরক ভূমিকা পালন করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। (আদিপুস্তক ২:১৮) পরিবারের মস্তক হিসেবে একজন স্বামীর দায়িত্ব হল, তার পরিবারের বস্তুগত বিষয়গুলো জোগানো এবং তাদেরকে ঈশ্বর সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া। স্ত্রীর প্রতি প্রেম দেখানোর ক্ষেত্রে তার আত্মত্যাগী হওয়া উচিত। স্বামী ও স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি প্রেম এবং সম্মান দেখানো উচিত। যেহেতু সমস্ত স্বামী ও স্ত্রী অসিদ্ধ, তাই ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়টা শেখা সুখী পরিবারের এক চাবিকাঠি।—পড়ুন, ইফিষীয় ৪:৩১, ৩২; ৫:২২-২৫; ১ পিতর ৩:৭.

৩. আপনি যদি বিয়েতে সুখী না হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কি আপনার সাথিকে পরিত্যাগ করা উচিত?

আপনার বিয়েতে যদি কঠিন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে আপনাদের দুজনেরই পরস্পরের সঙ্গে প্রেম সহকারে আচরণ করার ব্যাপারে কাজ করা উচিত। (১ করিন্থীয় ১৩:৪, ৫) সাধারণত বিয়েতে যে-সমস্যাগুলো দেখা দেয়, তা সমাধান করার উপায় হিসেবে ঈশ্বরের বাক্য পৃথক থাকাকে সুপারিশ করে না।—পড়ুন, ১ করিন্থীয় ৭:১০-১৩.

৪. সন্তানেরা, ঈশ্বর তোমাদের কাছ থেকে কী চান?

যিহোবা চান যেন তোমরা সুখী হও। কীভাবে তোমরা তোমাদের যৌবনকালকে উপভোগ করতে পারো, সেই ব্যাপারে তিনি তোমাদেরকে সবচেয়ে উত্তম উপদেশ দান করেন। তিনি চান যেন তোমরা তোমাদের বাবা-মায়ের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা থেকে উপকার লাভ করো। (কলসীয় ৩:২০) এ ছাড়া, যিহোবা চান যেন তোমরা তোমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর পুত্রের জন্য বিভিন্ন কাজ করে আনন্দ লাভ করো।—পড়ুন, উপদেশক ১১:৯–১২:১; মথি ১৯:১৩-১৫; ২১:১৫, ১৬.

৫. বাবা-মায়েরা, আপনাদের সন্তানেরা কীভাবে সুখ খুঁজে পেতে পারে?

সন্তানদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান জোগানোর জন্য আপনাদের কঠোর পরিশ্রম করা উচিত। (১ তীমথিয় ৫:৮) কিন্তু, আপনার সন্তানরা যদি সুখ খুঁজে পেতে চায়, তাহলে তাদেরকে ঈশ্বরের প্রতি প্রেম দেখানোর এবং তাঁর সম্বন্ধে জানার বিষয়েও শিক্ষা দিতে হবে। (ইফিষীয় ৬:৪) ঈশ্বরের প্রতি প্রেম দেখানোর ক্ষেত্রে আপনাদের উদাহরণ আপনাদের সন্তানদের হৃদয়কে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। আপনাদের সন্তানদেরকে ঈশ্বরের বাক্যের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষা দিলে তা তাদেরকে ইতিবাচক উপায়ে চিন্তা করতে সাহায্য করতে পারে।—পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৪-৭; হিতোপদেশ ২২:৬.

আপনারা যখন সন্তানদেরকে উৎসাহ দেন এবং তাদের প্রশংসা করেন, তখন তারা উপকার লাভ করে। এ ছাড়া, তাদেরকে সংশোধন এবং শাসন করাও প্রয়োজন। এই ধরনের প্রশিক্ষণ তাদেরকে সেই আচরণ থেকে রক্ষা করে, যা তাদের সুখ কেড়ে নিতে পারে। (হিতোপদেশ ২২:১৫) তবে, শাসন কখনো কঠোর এবং নিষ্ঠুর হওয়া উচিত নয়।—পড়ুন, কলসীয় ৩:২১.

যিহোবার সাক্ষিরা বেশ কয়েকটা বই প্রকাশ করেছে, যেগুলো বিশেষভাবে বাবা-মা এবং সন্তানদেরকে সাহায্য করার জন্য লেখা হয়েছে। এই বইগুলো বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১৯:৭, ১১.