করিন্থীয়দের প্রতি দ্বিতীয় চিঠি ১:১-২৪

  • শুভেচ্ছা (১, ২)

  • সমস্ত ক্লেশের মধ্যে ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা (৩-১১)

  • পৌলের যাত্রা করার পরিকল্পনায় পরিবর্তন (১২-২৪)

 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রিস্ট যিশুর একজন প্রেরিত এবং আমাদের ভাই তীমথিয়, আমরা করিন্থে ঈশ্বরের মণ্ডলীর প্রতি ও সেইসঙ্গে আখায়ায় অবস্থিত সমস্ত পবিত্র ব্যক্তির প্রতি এই চিঠি লিখছি: ২  আমাদের পিতা ঈশ্বর এবং প্রভু যিশু খ্রিস্ট যেন তোমাদের প্রতি মহাদয়া দেখান এবং তোমাদের শান্তি দান করেন। ৩  আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্টের পিতা, ঈশ্বরের প্রশংসা হোক। তিনি করুণাময় পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর। ৪  তিনি আমাদের সমস্ত পরীক্ষার* মধ্যে সান্ত্বনা* দেন, যাতে আমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে যে-সান্ত্বনা পেয়েছি, সেই সান্ত্বনার দ্বারা অন্যদের সমস্ত ধরনের পরীক্ষার* মধ্যে সান্ত্বনা দিতে পারি। ৫  ঠিক যেমন খ্রিস্টের অনুসারী হিসেবে আমরা অনেক কষ্ট ভোগ করি, তেমনই খ্রিস্টের কারণে আমরা অনেক সান্ত্বনাও পেয়ে থাকি। ৬  আমরা যদি পরীক্ষার* মুখোমুখি হই, তা হলে সেটা তোমাদের সান্ত্বনা ও পরিত্রাণের জন্য; আর আমরা যদি সান্ত্বনা পেয়ে থাকি, তা হলে সেটা তোমাদের সান্ত্বনার জন্য। আর এই সান্ত্বনা তোমাদের সেই একই কষ্ট সহ্য করতে সাহায্য করে, যা আমরাও ভোগ করে থাকি। ৭  তোমাদের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে, কারণ আমরা জানি, তোমরা যেমন আমাদের মতো কষ্ট ভোগ করছ, তেমনই তোমরা আমাদের মতো সান্ত্বনাও পাবে। ৮  হে ভাইয়েরা, আমরা চাই না, এশিয়া প্রদেশে আমরা যে-ক্লেশ ভোগ করেছি, তা তোমাদের অজানা থাকুক। সেখানে সহ্যের অতিরিক্ত এমন চাপ আমাদের উপর এসেছিল যে, আমরা জীবনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। ৯  সত্যি বলতে কী, আমাদের মনে হয়েছিল, যেন আমাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এমনটা এইজন্য হয়েছিল, যাতে আমরা নিজেদের উপর নয়, বরং ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি, যিনি মৃতদের পুনরুত্থিত* করেন। ১০  তিনি এইরকম ভয়ানক মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করেছেন এবং উদ্ধার করবেন আর তাঁর উপর আমাদের এই প্রত্যাশা আছে যে, তিনি ভবিষ্যতেও আমাদের উদ্ধার করবেন। ১১  এ ছাড়া, আমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করার মাধ্যমেও তোমরা আমাদের সাহায্য করতে পার। কারণ অনেকে যদি আমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, তা হলে তিনি সেই প্রার্থনা শুনবেন এবং আমাদের সাহায্য করবেন। এর ফলে অনেকে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে পারবে। ১২  আমাদের গর্ব বোধ করার কারণ হল: আমাদের বিবেক এই সাক্ষ্য দেয় যে, আমরা যখন জগতের লোকদের সঙ্গে ছিলাম এবং বিশেষ করে তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখন আমরা পবিত্রতা এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা আন্তরিকতা দেখিয়েছি। আমরা এই জগতের প্রজ্ঞার উপর নির্ভর করিনি, বরং ঈশ্বরের মহাদয়ার উপর নির্ভর করেছি। ১৩  কারণ তোমরা যা পড়তে পার* এবং বুঝতে পার, সেটা ছাড়া তো অন্য কিছুই আমরা তোমাদের লিখছি না আর আমি আশা করি যে, তোমরা এই বিষয়গুলোও পুরোপুরিভাবে* বুঝতে পারবে, ১৪  ঠিক যেমন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে সেগুলো বুঝতে পেরেছে; হ্যাঁ, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বুঝতে পেরেছে যে, আমরা হলাম তোমাদের গর্বের কারণ; আমাদের প্রভু যিশুর দিনে আমরাও তোমাদের নিয়ে গর্ব করব। ১৫  এই আস্থার কারণেই আমার ইচ্ছা ছিল, আমি দ্বিতীয় বার তোমাদের কাছে আসব, যাতে তোমরা আবারও আনন্দিত* হতে পার; ১৬  কারণ আমার ইচ্ছা ছিল, ম্যাসিডোনিয়ায় যাওয়ার পথে এবং ম্যাসিডোনিয়া থেকে ফেরার সময় তোমাদের কাছে যাব আর এরপর তোমরা আমাকে যিহূদিয়ায় যাওয়ার সময় কিছুটা পথ এগিয়ে দেবে। ১৭  তোমরা জান, আমি যখন তা করার কথা চিন্তা করছিলাম, তখন আমি বিষয়টাকে হালকাভাবে দেখিনি। কিংবা আমি নিজের খেয়ালখুশিমতো কাজ করার কথা চিন্তা করিনি যে, একবার “হ্যাঁ” বলব, একবার “না” বলব। ১৮  ঈশ্বর যেমন বিশ্বাসযোগ্য, তেমনই আমাদের কথাও বিশ্বাসযোগ্য। আমরা প্রথমে “হ্যাঁ” বলে পরে “না” বলি না। ১৯  কারণ ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্ট, যাঁর বিষয়ে আমরা অর্থাৎ আমি, সীল* ও তীমথিয় তোমাদের কাছে প্রচার করেছিলাম, তিনি প্রথমে “হ্যাঁ” বলে পরে “না” বলেননি, বরং তিনি যখন “হ্যাঁ” বলেন, তখন তা সবসময় “হ্যাঁ” হবে। ২০  কারণ ঈশ্বরের যত প্রতিজ্ঞা রয়েছে, সেগুলোর সবই যিশুর মাধ্যমে “হ্যাঁ” হয়েছে। এই কারণে তাঁর নামে আমরা ঈশ্বরকে “আমেন” বলি, যাতে ঈশ্বর মহিমান্বিত হন। ২১  কিন্তু, যিনি এই বিষয়টা নিশ্চিত করেন যে, তোমরা ও আমরা খ্রিস্টের এবং যিনি আমাদের অভিষিক্ত করেছেন, তিনি ঈশ্বর। ২২  তিনি আমাদের প্রতি তাঁর অনুমোদন প্রকাশ করেছেন এবং বায়না* দিয়েছেন অর্থাৎ আমাদের হৃদয়ে পবিত্র শক্তি দিয়েছেন। ২৩  আমি তোমাদের আরও দুঃখ দিতে চাইনি বলে করিন্থে আসিনি আর এই বিষয়ে ঈশ্বর আমার সাক্ষি। ২৪  আমরা যে তোমাদের বিশ্বাসের উপর কর্তৃত্ব করছি, এমন নয়, বরং তোমাদের আনন্দের জন্য আমরা তোমাদের সহকর্মী হিসেবে কাজ করছি, কারণ তোমরা তোমাদের বিশ্বাসের জন্যই দাঁড়িয়ে আছ।

পাদটীকাগুলো

বা “ক্লেশের।”
বা “উৎসাহ।”
বা “ক্লেশের।”
বা “ক্লেশের।”
শব্দকোষ দেখুন।
বা সম্ভবত, “যা ইতিমধ্যে ভালোভাবে জান।”
আক্ষ., “শেষ পর্যন্ত।”
বা সম্ভবত, “তোমরা দু-বার উপকৃত।”
বা “সীলবান।”
বা “অগ্রিম মূল্য; নিশ্চয়তা।”