সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনার বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা

আপনার বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা

পারিবারিক সুখের চাবিকাঠি

আপনার বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা

স্ত্রী বলেন: “আমি কিছুদিন ধরে লক্ষ করছিলাম যে, আমার স্বামী মাইকেল এবং আমার মধ্যে আবেগগত দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে এবং ছেলে-মেয়ের প্রতিও সে উদাসীন হয়ে পড়েছে। * আমরা ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার পর পরই তার আচরণ পরিবর্তিত হতে থাকে আর আমি সন্দেহ করছিলাম যে, সে কম্পিউটারে পর্নোগ্রাফি দেখছে কি না। একদিন রাতে, ছেলে-মেয়েরা বিছানায় চলে যাওয়ার পর, আমি তাকে সরাসরি এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করি আর সে তার ভুল স্বীকার করে বলে যে, সে কিছুদিন ধরে পর্নোগ্রাফিক ওয়েব সাইট দেখে আসছিল। একথা শুনে আমি একেবারে ভেঙে পড়েছিলাম। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে, আমার ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। আমি তার ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছিল, যখন একজন সহকর্মী সেই সময়ে আমার প্রতি রোমান্টিক আগ্রহ প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন।”

স্বামী বলেন: “কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী মারিয়া আমাদের কম্পিউটারে স্টোর করে রাখা একটা ছবি দেখতে পায় এবং এই বিষয়ে আমাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করে। যখন আমি স্বীকার করি যে, আমি নিয়মিত পর্নোগ্রাফিক ওয়েব সাইট দেখি, তখন সে রেগে আগুন হয়ে যায়। আমি অত্যন্ত বিব্রত বোধ করি এবং নিজেকে খুবই অপরাধী ভাবতে থাকি। আমি ভেবেছিলাম, আমাদের বিবাহিত জীবন তখনই শেষ হয়ে যাবে।”

 মাইকেল এবং মারিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল বলে আপনি মনে করেন? আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে, পর্নোগ্রাফি দেখাটাই মাইকেলের প্রধান সমস্যা ছিল। কিন্তু, মাইকেল যেমন বুঝতে পেরেছিলেন, এই খারাপ অভ্যাসটা আসলে আরও গুরুতর বিষয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল—বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় না রাখা। * বিয়ের পর মাইকেল এবং মারিয়া এমন এক জীবনের জন্য প্রতীক্ষা করেছিল, যেখানে তারা ভালোবাসা ও আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতাগুলো ভাগাভাগি করে নেবে। কিন্তু অনেক দম্পতির মতো, সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিবাহের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি দুর্বল হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে তারা পরস্পরের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে বলে মনে হয়।

আপনার কি মনে হয় যে, আপনার এবং আপনার সাথির মধ্যে যে-বন্ধন রয়েছে, তা বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল হয়ে গিয়েছে? আপনি কি পুনরায় সেই বন্ধনকে মজবুত করতে চান? যদি চান, তাহলে আপনাকে এই তিনটে প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে: আপনার বিবাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার মানে কী? কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো এই প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে দিতে পারে? আর আপনার সাথির প্রতি আপনার প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ় করার জন্য আপনি কী করতে পারেন?

প্রতিশ্রুতি কী?

বিবাহের প্রতিশ্রুতিকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? অনেকেই বলবে যে, দায়িত্ববোধ থেকে এটা উদ্ভূত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এক দম্পতি তাদের সন্তানদের কারণে অথবা বিয়ের উদ্যোক্তা ঈশ্বরের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের কারণে হয়তো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে। (আদিপুস্তক ২:২২-২৪) নিশ্চিতভাবে, এই প্রেরণাগুলো প্রশংসনীয় আর সেগুলো একটা বিয়েকে সংকটপূর্ণ সময়ে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু সুখী হওয়ার জন্য, বিবাহসাথিদের একে অন্যের প্রতি কেবলমাত্র এক দায়িত্ববোধের চেয়েও আরও বেশি কিছু অনুভব করা প্রয়োজন।

যিহোবা ঈশ্বর বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন, যাতে তা এক দম্পতির জন্য গভীর আনন্দ ও পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে। তিনি চেয়েছিলেন একজন পুরুষ ‘আপন ভার্য্যায় আমোদ করিবে’ এবং একজন নারী তার স্বামীকে ভালোবাসবে আর এইরকম অনুভব করবে যে, তার স্বামী তাকে স্বামীর নিজ দেহের মতো ভালোবাসে। (হিতোপদেশ ৫:১৮; ইফিষীয় ৫:২৮) এই ধরনের এক বন্ধন গড়ে তোলার জন্য এক দম্পতির একে অন্যকে বিশ্বাস করতে শিখতে হবে। সেইসঙ্গে একইরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, তাদেরকে আজীবন বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। যখন একজন পুরুষ ও নারী একে অন্যের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে এবং অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে ওঠার জন্য কাজ করে, তখন বিবাহের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি জোরালো হবে। তারা এমন এক বন্ধন গড়ে তুলবে, যেটাকে বাইবেলে এতটাই ঘনিষ্ঠ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যেন দুজন ব্যক্তি “একাঙ্গ।”—মথি ১৯:৫.

তাই, প্রতিশ্রুতিকে সেই মিশ্রণের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেটা একটা মজবুত ঘরের ইটের গাঁথনিকে একসঙ্গে যুক্ত রাখে। এই মিশ্রণ হচ্ছে কিছু উপাদানের সমন্বয়, যার মধ্যে রয়েছে বালি, সিমেন্ট এবং জল। একইভাবে, প্রতিশ্রুতি এই ধরনের বিষয়গুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয় যেমন, দায়িত্ব, বিশ্বাস এবং বন্ধুত্ব। কী সেই বন্ধনকে দুর্বল করে দিতে পারে?

কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো রয়েছে?

প্রতিশ্রুতির জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের প্রয়োজন। আপনার সাথিকে খুশি করার জন্য আপনাকে নিজের পছন্দগুলো পরিত্যাগ করতে ইচ্ছুক হতে হবে। কিন্তু, অন্য কারো ইচ্ছাকে মেনে নেওয়ার ধারণা—‘এতে আমার কী লাভ হবে?’ এইরকম প্রশ্ন জিজ্ঞেস না করেই দেওয়ার ইচ্ছা—অনেকের কাছেই অপ্রিয় আর এমনকী কারো কারো কাছে বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। কিন্তু নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘এমন কতজন স্বার্থপর ব্যক্তিকে আমি চিনি, যারা বিবাহিত জীবনে সুখী?’ সম্ভবত এর উত্তর হবে, থাকলেও খুব অল্পই। কেন? যখন ব্যক্তিগত ত্যাগস্বীকার করার প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে যখন স্বামী বা স্ত্রীর ছোটোখাটো ত্যাগস্বীকারের ফলে তাৎক্ষণিক কোনো প্রাপ্তি থাকে না, তখন একজন স্বার্থপর ব্যক্তি সম্ভবত বিবাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন না। কোনো দম্পতি প্রথম যখন প্রেমে পড়েছিল, তখন তাদের মধ্যে রোমান্টিক অনুভূতি যত মধুরই থাকুক না কেন, প্রতিশ্রুতি ছাড়া সেই সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যাবে।

বাইবেল বাস্তবসম্মতভাবে স্বীকার করে যে, বিবাহে কঠোর পরিশ্রম যুক্ত রয়েছে। এটি বলে, “যে বিবাহিত, সে সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিরূপে স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করিবে” এবং “বিবাহিতা স্ত্রী সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিরূপে স্বামীকে সন্তুষ্ট করিবে।” (১ করিন্থীয় ৭:৩৩, ৩৪) দুঃখের বিষয় যে, এমনকী যে-বিবাহসাথিরা সাধারণত নিঃস্বার্থ, তারাও সবসময় একে অন্যের উদ্‌বিগ্নতাকে বুঝতে পারে না অথবা তাদের সাথির ত্যাগস্বীকারকে মূল্যবান বলে গণ্য করে না। কোনো দম্পতি যখন একে অন্যের প্রতি উপলব্ধি দেখাতে ব্যর্থ হয়, তখন তাদের বিয়ে সম্ভবত আরও বেশি “দৈহিক ক্লেশ” নিয়ে আসে, যা তারা উপলব্ধি দেখালে যতটা হতো, তার চেয়ে বেশি হয়।—১ করিন্থীয় ৭:২৮.

যদি সংকটপূর্ণ সময়ে আপনার বিয়েকে টিকিয়ে রাখতে হয় এবং অনুকূল সময়ে সেই সম্পর্ককে উন্নত করতে হয়, তাহলে আপনার এটাকে এক স্থায়ী বন্ধন হিসেবে দেখতে হবে। কীভাবে আপনি এই ধরনের এক মনোভাব গড়ে তুলতে পারেন এবং কীভাবে আপনি আপনার সাথিকে আপনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে উৎসাহিত করতে পারেন?

প্রতিশ্রুতিকে যেভাবে দৃঢ় করা যায়

একটা মূল বিষয় হচ্ছে, ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের পরামর্শ নম্রভাবে কাজে লাগানো। তা করা আপনার এবং আপনার সাথি উভয়ের জন্যই “উপকারজনক” হবে। (যিশাইয় ৪৮:১৭) কেবলমাত্র দুটো ব্যবহারিক পদক্ষেপ বিবেচনা করুন, যা আপনি নিতে পারেন।

১. আপনার বিয়েকে এক অগ্রাধিকারের বিষয় করুন। ‘যাহা যাহা ভিন্ন প্রকার [“বেশি গুরুত্বপূর্ণ,” NW], তাহা পরীক্ষা করিয়া চিন,’ প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন। (ফিলিপীয় ১:১০) স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে-পুরুষ তার স্ত্রীকে সমাদর করেন, তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে সমাদর লাভ করবেন। আর যে-নারী তার স্বামীকে সম্মান করেন, তিনি “ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বহুমূল্য।”—১ পিতর ৩:১-৪, ৭.

আপনার কাছে আপনার বিয়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? সাধারণত, কোনো কর্মপ্রচেষ্টাকে আপনি যত বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করবেন, সেটার জন্য তত বেশি সময় ব্যয় করবেন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘গত মাসে আমার সাথির সঙ্গে কাটানোর জন্য আমি কতটা সময় আলাদা করে রেখেছিলাম? আমরা যে এখনও ভাল বন্ধু আছি, এই বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার জন্য আমি কোন নির্দিষ্ট বিষয়গুলো করেছিলাম?’ আপনার বিবাহসাথির যত্ন নেওয়ার জন্য যদি আপনি খুবই অল্পসময় ব্যয় করে থাকেন, তাহলে আপনার সাথির পক্ষে এটা বিশ্বাস করা হয়তো কঠিন হবে যে, আপনি আপনাদের বন্ধনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছেন।

আপনার সাথি কি মনে করেন যে, আপনি আপনার বিবাহের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ? আপনি কীভাবে তা বুঝতে পারবেন?

এটা করে দেখুন: একটা কাগজে এই পাঁচটি বিষয় লিখুন: টাকাপয়সা, কাজ, বিয়ে, আমোদপ্রমোদ এবং বন্ধুবান্ধব। এরপর, আপনার সাথির কাছে যেগুলো অগ্রাধিকারের বিষয় বলে আপনি মনে করেন, সেগুলো ক্রমানুসারে সাজান। আপনার সম্বন্ধে আপনার সাথিকেও একই বিষয় করতে বলুন। এটা করা হয়ে গেলে, আপনার সাথির সঙ্গে সেই তালিকাগুলো বিনিময় করুন। আপনার সাথি যদি মনে করেন যে, আপনি বিবাহে যথেষ্ট সময় ও কর্মশক্তি প্রদান করছেন না, তাহলে একে অন্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ় করার জন্য আপনার হয়তো কোন পরিবর্তনগুলো করতে হবে, সেই বিষয়ে আলোচনা করুন। সেইসঙ্গে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমার সাথির কাছে যে-বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোর প্রতি আরেকটু বেশি আগ্রহ দেখাতে আমি কী করতে পারি?’

২. সমস্ত ধরনের অবিশ্বস্ততা পরিহার করুন। যিশু খ্রিস্ট বলেছিলেন: “যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।” (মথি ৫:২৮) একজন পুরুষ বা নারী যখন বিয়ের বাইরে যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন, তখন তিনি সেই বন্ধনের ওপর এক প্রচণ্ড আঘাত করেন, যেটাকে বাইবেল বিবাহবিচ্ছেদের এক ভিত্তি বলে থাকে। (মথি ৫:৩২) কিন্তু, ওপরে উদ্ধৃত যিশুর কথাগুলো দেখায় যে, একজন ব্যক্তি আক্ষরিকভাবে ব্যভিচার করে ফেলার অনেক আগেই তার হৃদয়ে এক মন্দ কামনা থাকতে পারে। সেই মন্দ কামনা হৃদয়ে পোষণ করাটাই হচ্ছে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।

আপনার বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার জন্য পর্নোগ্রাফি না দেখার বিষয়ে এক গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞা করুন। অনেকে যা-ই বলুক না কেন, পর্নোগ্রাফি একটা বিয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। একজন স্ত্রী তার স্বামীর পর্নোগ্রাফি দেখার অভ্যাসের বিষয়ে নিজের অনুভূতিকে যেভাবে প্রকাশ করেন, তা লক্ষ করুন: “আমার স্বামী বলে যে, পর্নোগ্রাফি দেখা আমাদের প্রেমকে আরও উত্তেজিত করে তুলবে। কিন্তু, আমার কেবল এইরকম মনে হয় যে আমার কোনো মূল্যই নেই, আমি তার জন্য যথেষ্ট নই। সে যখন এগুলো দেখে, তখন আমি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ি।” আপনি কি বলবেন যে, এই ব্যক্তি তার বিবাহের প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ় করছেন, নাকি ক্ষতিগ্রস্ত করছেন? আপনি কি মনে করেন এই স্বামী তার স্ত্রীর জন্য বিবাহের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকাকে সহজতর করছেন? তিনি কি স্ত্রীকে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করছেন?

বিশ্বস্ত ব্যক্তি ইয়োব ‘তার চোখের সঙ্গে চুক্তি’ করার মাধ্যমে তার বিয়ের প্রতি এবং তার ঈশ্বরের প্রতি নিজের প্রতিশ্রুতিকে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি “কোন কুমারীর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ” না করার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়েছিলেন। (ইয়োব [যোব] ৩১:১, বাংলা জুবিলী বাইবেল) কীভাবে আপনি ইয়োবকে অনুকরণ করতে পারেন?

পর্নোগ্রাফি দেখা পরিহার করা ছাড়াও আপনাকে বিপরীত লিঙ্গের একজন ব্যক্তির প্রতি অনুপযুক্ত অনুরাগ গড়ে তোলা থেকে নিজের হৃদয়কে রক্ষা করতে হবে। এটা ঠিক যে, অনেকে বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রেমের ভান করাকে বিয়ের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করে না। কিন্তু, ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সাবাধান করে: “অন্তঃকরণ সর্ব্বাপেক্ষা বঞ্চক, তাহার রোগ অপ্রতিকার্য্য, কে তাহা জানিতে পারে?” (যিরমিয় ১৭:৯) আপনার হৃদয় কি আপনাকে প্রতারিত করেছে? নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘কার প্রতি আমি বেশি দৃষ্টি নিবদ্ধ করি—আমার সাথির প্রতি, নাকি বিপরীত লিঙ্গের অন্য কোনো ব্যক্তির প্রতি? কাকে আমি প্রথমে সুখবর জানাই—আমার সাথিকে, নাকি অন্য কাউকে? যদি আমার সাথি আমাকে বিপরীত লিঙ্গের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করাকে সীমিত করতে বলে, তাহলে আমি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব? আমি কি বিরক্ত হব, নাকি আমি আনন্দের সঙ্গে উক্ত পরিবর্তন করব?’

এটা করে দেখুন: যদি আপনি দেখেন যে, আপনার সাথি ছাড়া আপনি অন্য কারো প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন, তাহলে তার সঙ্গে কেবলমাত্র যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই যোগাযোগ রাখুন, এর বেশি নয়। এইরকম ভাবতে থাকবেন না যে, এই ব্যক্তি কোন কোন দিক দিয়ে আপনার সাথির চেয়ে শ্রেষ্ঠ। এর পরিবর্তে, আপনার সাথির ইতিবাচক গুণগুলোর প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। (হিতোপদেশ ৩১:২৯) কেন আপনি আপনার সাথির প্রেমে পড়েছিলেন, সেই কারণগুলো মনে করে দেখুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমার সাথি কি আসলেই সেই গুণগুলো হারিয়ে ফেলেছে, নাকি আমি সেগুলো লক্ষ করা বন্ধ করে দিয়েছি?’

পদক্ষেপ নিন

শুরুতেই উল্লেখিত মাইকেল এবং মারিয়া, তাদের বিষয়টা কীভাবে মীমাংসা করবে, সেই বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অবশ্য, পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে কেবলমাত্র প্রথম ধাপ। কিন্তু, তাদের সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার এবং সাহায্য খোঁজার জন্য ইচ্ছুক হওয়ার দ্বারা মাইকেল এবং মারিয়া উভয়েই স্পষ্টতই দেখিয়েছিল যে, তারা তাদের বিবাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আর তারা এটাকে সফল করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে ইচ্ছুক।

আপনার বিবাহ সুস্থির বা চাপপূর্ণ যা-ই হোক না কেন, আপনার সাথির জানতে হবে যে, বিবাহকে সফল করার জন্য আপনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়ে আপনার সাথিকে দৃঢ়প্রত্যয়ী করার জন্য উপযুক্ত যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আপনি কি তা করতে ইচ্ছুক? (w০৮ ১১/১)

[পাদটীকাগুলো]

^ নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।

^ এখানে যদিও একজন পুরুষের উদাহরণ রয়েছে, যিনি পর্নোগ্রাফি দেখেছেন, কিন্তু একই কাজ করে একজন নারীও দেখাতে পারেন যে, তিনি বিবাহে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেননি।

নিজেকে জিজ্ঞেস করুন . . .

▪ আমার সাথিকে আরও বেশি সময় দেওয়ার জন্য কোন কাজগুলোকে আমি কাটছাঁট করতে পারি?

▪ আমি যে আমাদের বিবাহের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই বিষয়ে আমার সাথিকে আশ্বস্ত করতে আমি কী করতে পারি?

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনার সাথির জন্য সময় বের করুন

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

অবিশ্বস্ততা শুরু হয় হৃদয়ে